বসুন্ধরা বিটুমিন গুণে-মানে নতুন পথ দেখাবে: কেসিসি মেয়র

খুলনা: খুলনায় বসুন্ধরা অয়েল অ্যান্ড গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডের বসুন্ধরা বিটুমিনের আয়োজনে ‘ইঞ্জিনিয়ার্স মিট’ শীর্ষক এক টেকনিক্যাল সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রোববার (১৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টায় খুলনা মহানগরীর সিটি ইন হোটেলে অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক।

অনুষ্ঠানে খুলনা সিটি করপোরেশন মেয়র বলেন, নির্মাণকাজে বিটুমিন গুরুত্বপূর্ণ। এতদিন বিদেশ থেকে আসা বিটুমিনের ওপর এ দেশের সড়ক নির্মাণকাজ নির্ভর করত। এসব বিটুমিনের খারাপ মানের কারণে অনেক সময় নির্মাণকাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বসুন্ধরা শিল্পগোষ্ঠী দেশের কল্যাণে ভূমিকা রাখছে। ইতোমধ্যে তারা বিটুমিন উৎপাদন করেছে। ইতোমধ্যে সড়ক বিভাগ এ বিটুমিনকে ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে এবং নির্মাণকাজে ব্যবহার করছে।

তিনি আরও বলেন, আশা করছি, বসুন্ধরা বিটুমিন গুণে-মানে নতুন পথ দেখাবে। আমরা দেখি, একটি রাস্তা করার পর ছয় মাস, এক বছর পর পিচ উঠে যায়। বিদেশ থেকে যে পিচটি আসে, তাতে অন্য কোনো কিছু মিশ্রিত থাকে কি না জানা নেই। সে পিচ দিয়ে রাস্তা করলে তা থাকে না, নষ্ট হয়ে যায়। আমাদের দেশের যে অর্থনীতি ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন হচ্ছে, সে হিসেবে রাস্তার উন্নয়ন হচ্ছে না।

 

মেয়র বলেন, সড়ক ও জনপদের যারা এখানে আছেন, তারা অবশ্যই দেখবেন। যদি বসুন্ধরার পিচ ভালো হয়, তাহলে সেই পিচটি ব্যবহার করবেন—সেটাই আমার অনুরোধ। পয়সা একটু বাঁচাতে গিয়ে বিদেশ থেকে নিম্নমানের পিচ এনে রাস্তা খারাপ হয়ে যায়। সেই কাজটা না করে এই পিচটা যাতে ব্যবহার করা যায়, সেটা আপনারা দেখবেন। আমাদের সিটি করপোরেশনের ইঞ্জিনিয়ররা অবশ্যই বসুন্ধরার পিচ সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়ে দেখবেন, যদি দেখেন পিচ টেকসই—তাহলে সেই সিপ ব্যবহারে আমার কোনো আপত্তি থাকবে না।

অনুষ্ঠানে সড়ক ও জনপথ বিভাগের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ আসলাম আলী বসুন্ধরা বিটুমিনের সাফল্য কামনা করেন। তিনি বলেন, আমরা খুব আনন্দিত। বিটুমনের জন্য আমাদের সব সময় বিদেশের ওপর নির্ভর করতে হতো। আবার এগুলোর মান ভালো না হওয়ায় নির্মাণ কাজগুলোর মান নষ্ট হয়ে যায়। দেশের বেসরকারি খাতে প্রথম প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা বিটুমিন। গুণ ও মান অক্ষুণ্ন রেখে প্রতিষ্ঠানটি দেশের সেবায় এগিয়ে আসবে বলে আমরা প্রত্যাশা করছি।

মোজাহার এন্টারপ্রাইজের প্রাইভেট লিমিটেডের স্বত্বাধিকারী কাজী মোজাহারুল হক বসুন্ধরা বিটুমিনকে স্বপ্ন পাওয়া ধন বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, অন্য পণ্যের মান খারাপ হলে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কিন্তু বিটুমিনের মান খারাপ হলে জাতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। জনগণের অর্থ নাশ হবে। সরকারি বিটুমিন আমদানীকারক প্রতিষ্ঠান দেশের চাহিদার ২০ শতাংশও মেটাতে পারে না। এ ক্ষেত্রে বসুন্ধরা বিটুমিট বিশেষ চমক। আমরা ৩০টি জেলায় নির্মাণকাজ করছি। ইতোমধ্যে এই বিটুমিন ব্যবহার করছি। আশা করি, বসুন্ধরা গ্রুপ দেশের স্বার্থে এই পণ্যে মান বজায় রেখে তাদের উৎপাদন অব্যাহত রাখবে।

 

 

অনুষ্ঠানে খুলনা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সহসভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বিশ্বাস বুলু, কেসিসির নির্বাহী প্রকৌশলী মশিউজ্জামান খান, বসুন্ধরা বিটুমিনের পরামর্শক ও আইইউটির সহকারী অধ্যাপক ড. নাজমুস সাকিব, বসুন্ধরা বিটুমিনের অ্যাসিট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার (সেলস) সুকান্ত কুমার সাহা প্রমুখ বক্তব্য দেন।

অনুষ্ঠানে সড়ক ও জনপথ বিভাগ, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর, খুলনা সিটি করপোরেশন, ঠিকাদার ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলীসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের শতাধিক প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

বসুন্ধরা বিটুমিন বেসরকারি খাতে স্থাপিত একমাত্র বিটুমিন প্রস্তুতকারী প্ল্যান্ট, যা অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে নির্মিত। বাংলাদেশে বিটুমিনের যে চাহিদা রয়েছে ৯০ শতাংশ বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রকৌশলীদের সঙ্গে বিটুমিন উৎপাদন প্রক্রিয়ার ধরণ উৎপাদন ক্ষমতা-গুণগতমান নিয়ন্ত্রণ ও উন্নয়ন বিষয়ে আলোচনা করা হয়। টেকসই সড়ক নির্মাণে নিম্নমানের বিটুমিনের পরিবর্তে উচ্চমানের বিটুমিনের প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্বের কথা আলোচনা করা হয়। আর টেকসই সড়ক নির্মাণে আমদানি নির্ভরতা দূর করে বসুন্ধরা বিটুমিন বিশেষ ভূমিকার রাখবে বলে সবাই প্রত্যাশা করেন।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি ঢাকার অদূরে কেরাণীগঞ্জে বসুন্ধরা গ্রুপের অঙ্গ-প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা অয়েল অ্যান্ড গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডের বিটুমিন প্ল্যান্টের উদ্বোধন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল।